Sunday, 10 May 2020

আর আল্লাহর রহমত ও সাহায্য তখনই আসবে যখন মানুষের মধ্যে চারটি গুণ থাকবে।

বাদশা হারুন অর রশীদের বাবা ছিলেন বাদশা মাহদী বিন জাফর আবু জাফর মনসুর। একবার তাঁর শাসন আমলে প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো। মানুষ জীবন ধারণ করার জন্য কুকুর বিড়াল পর্যন্ত খেতে লাগলো। আর এবিষয়টি বাদশা মাহদী কে খুব ব্যথিত ও বেচাইন করে তুললো।

  একরাতে বাদশা মাহদী শুয়ে ছিলেন আর তাঁর গোলাম শুশ্রুষা করছিলো তখন তিনি গোলাম কে বললেন জানিস তো দুর্ভিক্ষের জন্য মনটা ভীষণ খারাপ! তো তুই এমন কোন একটা গল্প শোনা আমাকে যা এঅবস্থায় আমার মনকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দিবে।

  গোলাম বলতে লাগলো একবার এক চতুর প্রাণী সফরে যাবে তখন সে তার বাচ্চাকে বাঘের কাছে নিয়ে গেল আর বললো ভাই তোমার কাছেই আমার বাচ্চাটাকে রাখো। নিশ্চয়ই তুমিই তো জঙ্গলের রাজা। তারপর সে প্রাণীটি চলে গেল আর বাঘও বাচ্চাটাকে পীঠে নিয়ে জঙ্গলে ঘুরতে লাগলো। একবার এক দুর্ধর্ষ ঈগল বাচ্চাটিকে দেখতে পেল আর ছো মেরে নিয়ে গেল। বাঘ বেচারা অসহায়ের মতো চেয়ে দেখলো.. তাছাড়া যে তার আর কিছুই করার ছিল না!

  কিছুদিন পর চতুর প্রাণীটি এসে বাঘকে জিজ্ঞেস করল তার বাচ্চা কোথায়? বাঘ কিছু সময় নিরব থেকে বললো, সে আর নেই! চতুর প্রাণীটি বললো মানে কি!! কয় তোমার তো কিছু হয়নি? তুমি তো অক্ষতই আছো! বাঘ বললো বোন, দেখো যদি কোন জংলি প্রাণী নিতো তবে অবশ্যই আমি তার সাথে লড়াই করতাম কিন্তু আসমানী শিকারীর সাথে কী করে লড়াই করবো! তার সাথে লড়াই করার মতো কোনো যোগ্যতাই যে আমার নাই।

  এগল্প শোন মাত্রই বাদশা মাহদী জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন আর সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এতো কান্না করতে লাগলেন যে পুরো জায়নামাজ তাঁর চোখের পানি দিয়ে ভিজে গেল আর ওইদিকে বাদশার দোয়া শেষ হওয়ার আগেই মূষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আর দুর্ভিক্ষ বিদায় হলো। সুবহানাল্লাহ!

  বর্তমানে আমরা করোনা ভাইরাসের সাথে লড়াই করার কথা বলছি!!! অথচ লড়াই শব্দটি আল্লাহর একদম পছন্দ নয় চাই সে কথায় অহংকার থাক বা না থাক। মূলত এখন আমাদের চিকিৎসা করে অসহায়ত্ব প্রকাশ করা ও বেশি বেশি তাওবা করার সময়। কেননা করোনা একটি আসমানী মুসিবত আর আসমানী মুসিবতে আল্লাহর রহমত ও সাহায্য ছাড়া মানুষের করার কিছুই নেই।

  #আর আল্লাহর রহমত ও সাহায্য তখনই আসবে যখন মানুষের মধ্যে চারটি গুণ থাকবে।

  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে যতক্ষণ আমার উম্মতের মাঝে চারটি গুণ থাকবে ততক্ষণ কোন বিপদ তাদের স্পর্শও করবে না এবং আল্লাহর রহমত ও সাহায্য তাদের ছায়াসঙ্গী হবে। ১/ সদা সত্য বলা। ২) আমানতের খিয়ানত না করা। ৩/ অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা সমাজ থেকে পুরোপুরি নির্মূল করা। ৪/ হালাল খাদ্য ভক্ষণ করা ও সম্পূর্ণরূপে যে কোন প্রকার হারাম কার্যকলাপ বর্জন করা।

  #আল্লাহ্ আমাদের আমল করার তৌফিক দিন,

No comments:

Post a Comment